চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকায় মাসুদপুর সীমান্ত ফাঁড়ির বিজিবি সদস্যরা পদ্মা নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। শনিবার (২ আগস্ট) শিবগঞ্জ থানার চৌধুরী স্মরণ এলাকার এবং সীমান্ত পিলার ৪/২ এস থেকে আনুমানিক ২.৫ কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পদ্মা নদীতে ভাসমান অবস্থায় মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফাহাদ মাহমুদ রিংকু।
নিহতরা হলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের তারাপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে মো. শফিকুল (৪৫) ও মৃত মর্তুজার ছেলে মো. সেলিম (৩৫)।
বিজিবি সূত্রে জানা যায়, পদ্মা নদীতে একটি মরদেহ ভাসমান অবস্থায় আছে এমন খবর পায় ৫৩ বিজিবির মাসুদপুর ক্যাম্পের সদস্যরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বিজিবির টহল দল ও শিবগঞ্জ থানা পুলিশ। পরে বেলা ১১টার দিকে শফিকুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার এবং বিকেল ৪টার দিকে সেলিম নামে আরেকজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। স্থানীয়রা মো. শফিকুল ও সেলিমের মরদেহ শনাক্ত করেন।
স্থানীয়দের কাছে জানা যায়, শফিকুল ইসলাম ও সেলিম পদ্মা নদীতে মাছ ধরার পাশাপাশি সীমান্তে চোরাচালানের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে নদীপথে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে যান তারা। এরপর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন তারা।
মনাকষা ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য মো. সমির উদ্দিন জানান, শফিকুল ও সেলিম দুইজন জেলে। তারা মাছ আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করে। গত বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে তারা মাছ আহরণের কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। পর দিন সকালে বাড়ি ফিরে আসার কথা থাকলেও তারা বাড়ি ফিরে আসেনি।
তারা চোরাচারালের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, মাছ ধরেই জীবিকা নির্বাহ করতো। তবে চোরাচালানের সাথে সম্পৃক্ত থাকতেও পারে, আবার নাও পারে। সঠিকটা বলতে পারছি না।
সমির উদ্দিন বলেন, তারা ভারতের অভ্যন্তরে গিয়েও মাছ আহরণ করতো। তাই হইতোবা বিএসএফের সদস্যরা নির্যাতন করে মেরে ফেলতে পারে। আসলে তাদের ভাগ্যে কি হয়েছে সেটা আল্লাহ ভালো বলতে পারবেন।
শিবগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কিবরিয়া বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ সদস্যরা দুইজনের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে। তবে তিনি কীভাবে মারা গেছেন তা ময়নাতদন্ত ছাড়া বলা সম্ভব নয়।
বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফাহাদ মাহমুদ রিংকু জনান, সীমান্ত সংলগ্ন পদ্মা নদীতে ভাসমান অবস্থায় দুইজনের মরদেহ দেখতে পান বিজিবি সদস্যরা। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। বিজিবি ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। তারা দুইজন চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে এলাকাবাসীর মাধ্যমে জানতে পেরেছি। তবে কীভাবে তাদের মৃত্যু হলো তা ময়নাতদন্তের মাধ্যমে জানা যাবে।
ডেস্ক/ই.ই
মন্তব্য করুন: