মাইগ্রেন নিয়ে অনেকের মধ্যেই একটা ভুল ধারণা আছে। অনেকেই একে কেবলই মাথাব্যথা ভেবে খুব একটা আমলে নেন না। কিন্তু যাঁরা ভুগেছেন, তাঁরাই জানেন মাইগ্রেনের যন্ত্রণা ঠিক কতটা ভয়ানক। মাথার এক পাশে তীব্র ব্যথা, বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরা আর আলো–শব্দের প্রতি অসহনীয় সংবেদনশীলতা এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। মাইগ্রেনের এই অসহ্য ব্যথার কারণ শুধু মানসিক চাপ নয়, হতে পারে অতিরিক্ত বিশ্রামও।
কেন মাইগ্রেন হয় ?
ঠিক কী কারণে মাইগ্রেনের ব্যথা ওঠে, তা নিয়ে এখনো নিশ্চিত নন বিশেষজ্ঞরা। মাইগ্রেনের পেছনে কাজ করতে পারে একাধিক কারণ। তবে চিকিৎসকেরা সাধারণত অতিরিক্ত চাপকেই কারণ হিসেবে ধরে থাকেন।
অতিরিক্ত কাজ কিংবা কাজ নিয়ে দুশ্চিন্তা থেকে মাইগ্রেন আক্রমণ হয় বেশি। এ ক্ষেত্রে সাধারণত চিকিৎসকেরা বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দেন। আলো কিংবা শব্দ থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখে যথাসম্ভব বিশ্রাম নিলেই ধীরে ধীরে কমে আসে মাইগ্রেন।
কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, এই বিশ্রাম থেকেও মাইগ্রেনের ব্যথা হতে পারে। দীর্ঘ সময় ছুটি কাটানো কিংবা আরাম করতে করতে মাইগ্রেন আক্রমণ করে বসতে পারে।
বিশ্রাম নয়, অতিরিক্ত বিশ্রামই দায়ী ?
বিশ্রাম নিজে থেকে মাইগ্রেন তৈরি করে না; বরং অনিয়মিত বিশ্রামের ফলে মাইগ্রেন তৈরি হতে পারে। অনেক সময় দেখা যায়, দীর্ঘদিন টানা কাজের পর হুট করে বিশ্রাম নিলে শরীর ছেড়ে দেয়, তেমনই মস্তিষ্কও বিশ্রাম নিতে শুরু করে।
সমস্যা হলো মস্তিষ্ক অভ্যাসের দাস, টানা কাজ করতে করতে মস্তিষ্ক যখন বিশ্রামের সুযোগ পায়, তখন হুট করে তালগোল পাকিয়ে ফেলতে পারে। ফলে চাপ কমে গেলে অনেক সময় সেখান থেকে মাইগ্রেন তৈরি হতে পারে।
দীর্ঘদিনের কাজের চাপ থেকে হঠাৎ লম্বা ছুটির আমেজে চলে যাই আমরা। তখন শরীরের এই রুটিন পরিবর্তন অনেক সময় মাইগ্রেনকে ডেকে আনে।
চিকিৎসকদের মতে, অতিরিক্ত বিশ্রাম কোনো সমস্যা নয়; বরং বিশ্রামের অনিয়মিত সময়সূচি অথবা রুটিনে হঠাৎ পরিবর্তনই এর মূল কারণ।
তাই বলে বিশ্রাম নেবেন না?
ব্যাপারটা তেমন নয়; বরং শরীরকে ধীরে ধীরে মানিয়ে নিতে হবে সময়ের সঙ্গে। টানা কাজের চাপ থাকলেও চেষ্টা করবেন ছোট ছোট বিরতি নিয়ে সেসব কাজ শেষ করতে। এতে শরীর বিশ্রামের সঙ্গে মানানসই থাকবে। হুট করে শরীর ছেড়ে দিলে মস্তিষ্ক তালগোল পাকিয়ে ফেলবে না।
তবে এটাও মনে রাখবেন, এ ধরনের মাইগ্রেন খুব বিরল; কালেভদ্রে দেখা যায়। যাঁদের নিয়মিত মাইগ্রেন হয়, তাঁদের ক্ষেত্রে এমনটা দেখা যায় না বললেই চলে।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মানসিক চাপ, ক্যাফেইন, অ্যালকোহল ও অনিয়মিত ঘুমের মতো পরিচিত কারণগুলোই মাইগ্রেনের জন্য দায়ী।
তাই ছুটি বা আরাম করার সময় এসব বিষয় মাথায় রাখলে আপনি মাইগ্রেন থেকে দূরে থাকতে পারবেন।
ডেস্ক/ই.ই
মন্তব্য করুন: